নিজস্ব প্রতিবেদক, চকরিয়া :: কক্সবাজারের চকরিয়ায় করোনাভাইরাস ঠেকাতে সরকারি নির্দেশ লকডাউন বা সামাজিক দূরত্ব মানছে না অধিকাংশ এলাকায়। বিশেষ করে চকরিয়া সদরের হাটবাজারে মানুষের ভিড় বেড়েই চলেছে। এ পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণ বাড়তে পারে জানিয়ে হাট বাজারগুলোকে স্কুল মাঠে সরিয়ে নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।
চকরিয়ায় একটি পৌরসভা ও ১৮টি ইউনিয়ন রয়েছে। তার মধ্যে চকরিয়া পৌর শহরে রয়েছে প্রায় ডজন খানেক ছোট-বড় হাট বাজার। আর ১৮ টি ইউনিয়নে রয়েছে প্রায় অর্ধ শতাধিক হাট বাজার । সম্প্রতি উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন হাটবাজারের সময়সুচি নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এতে আগের তুলনায় ভিড় আরও বেড়েছে। থাকছে না সামাজিক দূরত্ব। ভিড়ে একজন আরেকজনের গা ঘেঁষেই কেনাকাটা করতে বাধ্য হয়।
সকাল ১০টায় চকরিয়ার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বাজারগুলো লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। কার আগে কে কেনাকাটা করবে তার প্রতিযোগিতা চলে। বিশেষত পৌরশহরের কাঁচা বাজারের অবস্থা ভয়াবহ। অলিগলির দোকানগুলো গভীর রাতে বন্ধ হচ্ছে। অলিগলিতে জনসমাগম হচ্ছে। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়ার সরকারি আদেশ থাকলেও বিভিন্ন স্থানে লোকজন বিক্ষিপ্তভাবে ঘোরাফেরা করছে। ঘোরাফেরা ও চায়ের দোকানের আড্ডা চলছে আগের মতোই। মাঠগুলোতে ফুটবল-ক্রিকেট ম্যাচ খেলতে নেমে পড়ছে শিশু-কিশোর। সেনাবাহিনী ও পুলিশের টহল দেখলে তারাও পালিয়ে যায়। প্রশাসনের লোকজন চলে যাওয়ার পর যেই-সেই হয়ে যায় এলাকার চিত্র। অনেকটা প্রশাসনের সাথে চোর-পুলিশ খেলা খেলছে মানুষ। তবে, মানুষ চোর-পুলিশ খেললেও ক্ষতিটা বেশি হচ্ছে মানুষদের।
স্থানীয় সাংবাদিক মুহাম্মদ জিয়াউদ্দিন ফারুক বলেন, ‘চকরিয়া বাজারগুলো দেখলে মনে হয় না দেশে কোন দূর্যোগ চলছে। সারাক্ষণ মানুষ লেগে থাকে। কোন ধরনের সামাজিক দুরুত্ব মানা হচ্ছে না। প্রশাসন বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করলেও পরক্ষণে একই অবস্থায় ফিরে যায়। তাই এসব বাজারগুলো ইউনিয়নের স্কুল মাঠ বা বড় কোন স্থানে নিয়ে যাওয়া উচিত।’
আবদুর রহিম নামের এক অটো রিক্সাচালক বলেন, ‘অভাবের কারণে রিকশা নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছি। একটু ত্রাণ পাবো ভেবে। কোন ত্রাণ পাইনি। এভাবে আর কতদিন ঘরে বসে থাকা যায়। পেটের দায়ে কাজে নামতে হয়।’
হারুনুর রশীদ নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী মহামারি করোনাভাইরাসের প্রকোপ যেভাবে বাড়ছে আমার দেশের মানুষ সচেতন না হলে আমাদের মতো মধ্য আয়ের দেশের জনগণের কি বিপদ হবে তা একমাত্র আল্লাই ভাল জানেন।’
সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিমুল হক বলেন, ‘আমার এলাকায় কোন ধরনের জনসমাগম করতে দেয়া হচ্ছে না। বাজারগুলোতে যাতে সামাজিক দুরুত্ব বজায় থাকে সেজন্য মনিটরিং হচ্ছে। কেউ অবাধ্য হলে প্রশাসনের সহায়তা নেওয়া হচ্ছে।’
চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। জনসমাগম ঠেকানো ও লকডাউন বাস্তবায়ন করতে এলাকায় এলাকায় গিয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে, মাইকিং করা হচ্ছে।’
পাঠকের মতামত: